কবির বর্ণমালা
কবি! তোমরা ঈশ্বরের তৈরি
সে আকাশচুম্বী মিনার...
যা রুখে দিতে পারে ঝড়ের রোষানল।
সমুদ্রের তীরে দাঁড়ানো সুউচ্চ চট্টান..
বিপজ্জনক গিরিশৃঙ্গকে আবৃত করা মেঘ।
তীব্র বিদ্যুৎ লেখা অথবা অসীমের মাঝে
দাঁড় করানো সে বাঁধ যা নিরাপত্তা দেয়
জীবনকে দুরন্ত ঢেউ থেকে!
আশার যাদুকরী আওয়াজ
দিনের ভবিষ্যৎ বলে যায়..যখন
সৌভ্রাতৃত্ব ভেঙে পড়ার মুহুর্তে
মায়াময় ছদ্মবেশী বিশ্বাস ঘাতকের
মধুর গান বন্ধ হয়ে যায়।
সেখানে থাকে শুধু পরিপূর্ণ
স্বচ্ছ সমুদ্র তরঙ্গের বিশুদ্ধ সংগীত।
এখনো আশাবাদী থাকো...যদিও
কিছু অশুভ শক্তি সে সংগীত কে
ঘৃণায় উৎপন্ন যুক্তি দিয়ে জাতি কে
অন্ধ করে দিতে পারে।... অদমনীয় জেদ
তার মূল্যবোধের অবনয়ন করে!
প্রতিরোধের কান্না উঠলেও.. মানুষ-খেকোরা
এখনো তাদের ধারালো দাঁত এবং রক্তাক্ত
মুখ নিয়ে অস্থি-মজ্জা কামনা করছে।
আকাশচুম্বী মিনার তোমাদের স্মিত মুখের প্রচ্ছদ এখন সম্প্রসারিত হয়েছে..
সমস্ত ঘৃণা, ঈর্ষা ও মিথ্যার বিরুদ্ধে
বাতাসের প্রতিবাদ সু-উচ্চে তুলে ধরো....
হে কবি! তুলে ধরো--
যা কী না অর্ধ বিবৃত!
প্রিয়বন্ধুর পাঁচালি ..
জীবনের সেইসব অস্থিরতার দুর্ভাগ্যের
নিঃসঙ্গ দিনগুলোতে
সারভেন্টিজ দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকতো
আমার জন্য।
এক বিশ্বস্ত বন্ধু, অনন্য শুভ চিন্তক।
সেটাই ছিলো আমার জন্য প্রশান্তির
এক মূল্যবান উপহার।
উদারতার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ
তার জীবন এবং স্বভাব।
আমার সেই স্বপ্নগুলো ছিলো
মধ্যযুগীয় নাইটদের মতো সাহসী ও মুক্ত।
সোনার পানপাত্র থেকে মুকুট পর্যন্ত
নিয়ে যেতো গৌরবের সাথে!
আমার জন্য স্বস্তির নিঃশ্বাস
প্রার্থনা এবং আনন্দ ছিলো সে।
ছোট্ট ঝর্ণার কুলু তানের মতো
কথা বলতো,
কতো উত্তেজক... অথচ মৃদু!
হতাশার কোনো স্পর্শ নেই
সে আমার ভালোবাসা।
পৃথিবীটা কী-?-কেমন?
ভাগ্যের বুননে সীমাবদ্ধ!
বুনে যাই বীজ..
মৃত্যুহীন দুঃখ থেকে
ঐশ্বর্যময় আনন্দ ও পাগলের হাসি---
কত-না ঈশ্বরীয় সে ক্ষণ!
[কবি রুবেন দারিও ১৮৬৭ সালে নিকারাগুয়াতে
জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রচুর কাব্যগ্রন্থের রচয়িতা এবং স্পেনিস আমেরিকান মডার্নিষ্ট
মুভমেন্টের মুখ্য ব্যাক্তিত্ব। ১৯১৬ সালে তাঁর মৃত্যু হয়।]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন