: আপনার গল্প বলা কি এখন শেষ?
: নাতো। গল্প কি এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়? গল্পের ডাল আছে, পালা আছে, শাখা আছে, প্রশাখা আছে।
: তাহলে চুপ হয়ে গেলেন যে?
: নিস্তব্ধটাও কিন্তু এক ধরণের গল্প।
: এটা আবার কেমন?
: এই ধরো, তোমার চেহারার চলন, ফলন, দেখে আমি পরবর্তী ঘটনাটা কল্পনা করি, তাই নিস্তব্ধতাই আসল শক্তি --
: তার মানে আপনি স্বতঃস্ফূর্ত নয় - বুঝে শুনে এগোন । সেই সময় বুঝে, ভাষা বুঝে, নিজেকে সামলান – ওটা কি সত্যিই গল্প হলো।
: কেন, ওটাই তো গল্প। কেন আমি নিজের মনন কে চাপ দেব, ওটা তো লীজ দেওয়া আছে সভ্যতার কাছে – দন্ডী কাটা আছে, পেরোলেই রাবন আসবে । কেন যাব বলো । তাই তো ঘটনা খুজি, শুধু খুঁজিনা – দেখি – দৃশ্য হতে দেইনা।
: তাহলে আপনি কি এতক্ষণ কল্পনা করছিলেন না । দেখছিলেন -- দৃশ্য আমি জানতে চাইনা দেখাটা বলুন অন্তত।
: হুম! তবে সরি।
: এতে আবার সরি কেন?
: আপনার অনুমতি না নিয়ে কল্পনায় আপনাকেও যুক্ত করেছি -- শুধু দেখার আঙ্গিকে। দৃশ্য তো বলতে নেই, তাই বলবনা।
: কি কল্পনা করলেন?
: তাতো বলা যাবে না। কল্পনারা যতক্ষণ আলোহীন থাকে ততক্ষণ সজীব থাকে। আলোর দেখা পেলে কল্পনা তার সজীবতা হারায়।
: হেয়ালি রাখেন। যাকে নিয়ে কল্পনা করছেন সে যদি পাশেই থাকে তাহলে কল্পনার কি দরকার? রাত বাড়ছে।
: আচ্ছা সেকেন্ডের কাটাগুলো এত দ্রুত যাচ্ছে কেন? এত দ্রুত?
: সকালকে ধরবে বলে।
: লাভ কি? সকালকে ধরবে বলে ছুটছে। সকালকে ধররে আবার দুপুরকে ধরতে যাবে। সেটাকেও ধরে রাখতে পারবে না। বিকেল হবে, সন্ধ্যা হবে। তারপর রাত।
এই বৈচিত্রের কাছে আসার কি প্রয়োজন , যেখানে আমার দেখা ঠিক , দেখানো ঠিক , বোঝানোরও কোনো সমস্যাই নেই – প্রান বাঁচাতে বুঝবে।
এরকমের শ্রোতাই তো চাই।
: তাহলে সাবধানে থাকবেন আপনাকে যেন শ্রোতা হতে না হয় – সেরকম নজর দারী আছে তো।
: নিশ্চয়ই আছে , আমার নিজেকে রাখতে হয়না, যারা আমায় ভাবায় , লেখায় তারাই রাখে নিজেদের স্বার্থে। আসলে কি জানেন, শ্রোতা হবে মৃত্যুর কাছাকাছি মানুষেরা – উপভোগ করতে চায় জীবনের শেষ সন্ধ্যাটা – ফল প্রতিফল কেউই আশা করেনা। চৌখস শ্রোতা কোথায়, ওরা তো আটকা – অন্য গল্পে --
তাই সময়টাকে আটকে রাখতে চাই – সময়ের বৈচিত্র চাই না , আসলে কাউকেই ধরে রাখতে পারে না সময়, শুধু ছুয়ে যায়।
: আপনিও কি তাই সময়ের লেজ ধরে আপনার মনের মতন হবেন?
: ওটাই চাওয়া, তবে সেই শ্রোতাদের মিছিল আসবে কি – এই অল্প সময়ে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন