বুধবার, ১ জুন, ২০২২

ঊর্মিলা চক্রবর্তী-র অনুবাদ কবিতা

গোয়েন্ডোলিন ব্রুকস


আমরা বিলকুল তৈরি

 

পুল খেলোয়াড়েরা।

সাতজন, গোল্ডেন শাভেল-এ।

 

আমরা বিলকুল তৈরি।

আমরা স্কুল ছেড়েছি।

 

আমরা ঘোরাফেরা করি রাতে।

আমরা আঘাত করি  সোজাসুজি।

 

আমরা পাপ গাই।

আমরা হালকা ধেনো।

 

আমরা জ্যাজগানের জুনমাস।

আমরা  চট করে মরে যাই।


প্রেমে পড়া  

 

প্রেমে পড়া মানে

স্পর্শ করা আরো আলতো হাতে।

নিজের মধ্যে নিজে টানটান হও, তুমি ভালো থাকো।

 

তুমি সবকিছুর দিকে তাকাও

তার চোখ নিয়ে,

টকটকে লাল,

আকাশ নীল।

হঠাৎ তুমি জেনে যাও যে সেও জানে।

 

সে সেখানে নেই,

কিন্তু তুমি জান যে তোমরা দুজনে স্বাদ নিচ্ছ

শীতের, অথবা হালকা বসন্তের আবহাওয়া।

তার হাতে তোমার হাতটুকু ধরা

বড় বেশি হয়ে যায়।

সহ্যের বাইরে।

 

তুমি তার চোখে চাইতে পারোনা

কারণ তোমার নাড়ি যেন কখনওই বলে না

যেকথা বলার নয়।

যখন সে একটা দরজা বন্ধ করে

উপস্থিত থাকে না

 

তোমার বাহুদুটি তরল।

আর তুমি মুক্ত

এক বীভৎস মুক্তি নিয়ে।

 

তুমি সুন্দর অর্ধেক

এক সোনালি আঘাতের।

 

তুমি স্মরণ করো আর আকাঙ্ক্ষা করো তার ঠোঁট

স্পর্শ করতে, সেখানে ফিসফিস করে কথা বলতে।

, যখন ঘোষণা করাই

নিশ্চিত মৃত্যু!

, যখন জ্ঞাপন

মানেই সম্মোহিত করা,

 

লুটোতে দেখা সোনার স্তম্ভ

মামুলি ছাইয়ের মধ্যে।




[আফ্রিকান-আমেরিকান ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে কবি গোয়েন্ডোলিন ব্রুকস-এর জন্ম  বেড়ে ওঠা ১৯১৭ সালে কবি জন্ম নেবার তিনবছর পরে ১৯২০ সালে আমেরিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ সাংস্কৃতিক আন্দোলন হার্লেম রেনেশঁসের শুরু হয়কবি যখন ১৯৩০ সালে প্রথম কবিতা প্রকাশ করেন তখন হার্লেম রেনেশঁসের শেষপর্বকিন্তু তিনি ১৯৪৭ সালে দ্বিতীয় হার্লেম রেনেশঁসবা ‘কৃষ্ণশক্তি আন্দোলন’ (‘‘ব্ল্যাক পাওয়ার মুভমেন্ট)-এর সঙ্গে যুক্ত হন চিরদিন জাতিগত গর্ব এবং জাতিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ তাঁর কবিতাকে বিশেষত্ব দিয়েছিল

আফ্রিকান-আমেরিকান সাহিত্যে এই কৃষ্ণজাতিচেতনার সঙ্গে বিশেষভাবে মিশে থাকে এক চড়া প্রতিবাদের সুর। এই কবিতা একান্তভাবেই প্রতিবাদী কবিতা। পিছনে ফেলে আসা অন্ধকার ক্রীতদাসত্বের ইতিহাসের দিনগুলোর স্মৃতির সঙ্গে মিশে থাক নবলব্ধ স্বাধীন জীবনে খাবারবাসস্থানের অভাবের কথাঅসহনীয় প্রাত্যহিক জীবনযাপনের ক্লেশের কাহিনি আর শ্বেতাঙ্গ সমাজে অসম্মানে দিনযাপনের গ্লানি। গোয়েন্ডোলিন ব্রুকসের কবিতায় এই গ্লানির প্রকাশের সঙ্গেই ধ্বনিত হয়  প্রতিবাদের সুর।

 

জীবনে অনেক সম্মান  পুরস্কার লাভ করেন গোয়েন্ডোলিন ব্রুকস। তিনিই প্রথম আফ্রিকান আমেরিকান যিনি পুলিৎজার প্রাইজের মতো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক পুরস্কার লাভ 

করেন। উচ্চশিক্ষিত কবি আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন।]

1 টি মন্তব্য:

  1. বেশ ভালো লাগলো।অনুবাদ যেন আসল কবিতার মত পড়লাম

    উত্তরমুছুন