বুধবার, ১ জুন, ২০২২

রুদ্র কিংশুক-এর অনুবাদ কবিতা


বেতুল তারিমান

বিদ্রোহী

আমি ছিলাম এক শিশু

যন্ত্রণার জন্য আমি জড়ো করলাম একটা হ্রদ/ আমার মা চাপে রেশম ফোটার

আমার বাবাও এলো, আমার স্বপ্নে আহত ঘোড়াগুলো

 

মা, আমাকে লুকাও তোমার স্বপ্নে

তোমার মুক্তোর ভেতর

জীবন এক পোশাক পচনশীল

আমার ভেতরে একটা ঘোড়া টগবগাচ্ছে/ যেন লাগামছাড়া

যেন সেইসব শিশু যাদের তুমি বড় করে তুলেছো

 

সংকীর্ণ পাহাড়ি পথের শীতলতা থেকে

পুরনো শহরের সোঁদা গন্ধ থেকে

আমি প্রেমে পড়েছি যেন আমি চব্বিশ

আমি হয়ে উঠলাম সময়ের এক অঙ্গার

হা ছি

আমার বাবা এলো

 

আমার মা তার আনন্দে আমাকে পরেছিল


উপচে-পড়া মদিরার আনন্দ গান


ভালোবাসা একদিন আসতে পারতো

ভালোবাসার দুঃখের আমিতো বাধ্য ছিলাম

ভালোবাসা পুরনো জিনিসের ফেরিওয়ালা

গানেরা দরজা খুলে রাখে 

আমার মাতাল গভীরতার কোন শেষ নেই 

আমাকে একটা গোলাপ ছুড়ে দাও

গান তো আমার কাছে ভালোবাসার অজুহাত মাত্র


বিষন্ন বিদায় গানের সহযাত্রী

আর ধুসর লাল দুই ঋতুর ভেতরে রাখা দুঃখ 

আমার ঈশ্বর, আমি শীতল হয়ে যাই

যদি রাস্তা আমার কাছে শেষ হয়


ভালবাসা একদিন চলে যেতে পারে 

তার ভূগোল কাঠের

সে ফেটে যেতে পারে বিস্মরণে 

তার বাড়ি তারই কাছে নিষিদ্ধ 

যে খেলা সে মৃত্যুর সাথে খেলে

তা এক লম্বা "গোলাপকুঁড়ি"


চাঁদ শিকারী


(অভিনেতা)


আমি উদ্বিগ্ন

আমার ঘাড় ঘর্মাক্ত, আমার কটিদেশ

আমার নিচে কাপড় পতপত ওড়ে

আমার ভেতরে বুড়িয়ে-যাওয়া মেয়ে

তার কীট-দংশিত আকাঙ্ক্ষা


কোন কোন সময় একটা গোলাপের

সুগন্ধ আমার ভেতরে খোলে

আমার জামার উপর হালকা বাতাস 

ভালবাসা যেন সেই জায়গা যেখানে সে জন্মায়

আমার ত্বক: পরিষ্কার জল, আমার ত্বক: ক্ষুধার্ত পাখি

তার মুখ গোলাপি, সরল , নিষ্পাপ 

​             ​বলাটা জরুরী


এমনকি যদি তারা আমাকে শিশু ভাবে

সেই স্থানে যেখান থেকে আমার আসা

এখন আমি বিদ্রোহী 

ভেঙে-যাওয়া ত্বক 

মঞ্চের পিছনে

​                আমি ডুবে গেলাম যখন আমি যুদ্ধ লড়াই করলাম




( দর্শক)


একটা রাস্তা সর্বদায় হাসে

একটা বাড়ি খোঁজে একটা বন্ধু 

দুঃখ-কাতর এবং বিষণ্ণ 

কেউ একজন নীরব দলিত

বলে এক জায়গার কথা যেখানে জল হয়েছিল রক্তাক্ত


যেখানে আমি তাকাই একটা আয়না 

আমার ছেঁড়াখোঁড়া ভেতরের মধ্যে

কতজন নারী, জন্মোত্তর

এক বেদনা আমার ভেতর গভীর 

যখন আমি তাকাই আমার আয়না হোক আমার আনন্দ 

আমি বললাম 

পাহাড় আমার জন্য আশা করুক

ভালোবাসা আমার জন্য আশা করুক




(আয়না)


রাতের ভেতরে ফেলে-রাখা কেউ বন্ধ বাক্সের মতো/ সময়ের ভয়ঙ্কর গর্জন 

হিমশীতল করছে দেয়ালগুলো


​ ​যেন ক্রোধে 

​  ​জলে ছোঁড়া একটা পাথর

​     আমি জানতাম কীভাবে তার দুঃখ

মাপতে হয়

 

[বেতুল তারিমান (Betül Tariman, 1962) নতুন তুর্কি কবিতায় একজন বিশিষ্ট নাম। আনকারা Hacettepe University- তে তিনি ইতিহাসের পাঠ নিয়েছেন। তুর্কি কবিতায় বিশেষ অবদানের জন্য তিনি পেয়েছেন বিশিষ্ট সাহিত্য পুরস্কার Necatigil Prize (2004) আন্তালিয়ার বাসিন্দা এই কবি।

৪টি মন্তব্য: