রবিবার, ১ মে, ২০২২

সুধাংশুরঞ্জন সাহা-র অনুবাদ কবিতা

 


মীনা কুমারী

(৪১)

আমি নিজেকে নিজে জেনেছি।

আর যতটুকু যা জেনেছি,

আমার নিজের বাইরে তাকেই

হন্যে হয়ে খুঁজে গেছি।

 

(৪২)

আমার চোখের আনন্দ থমকে আছে।

থমকে আছে ঠিক অশ্রুকণার মতো।

অন্ধকারও ঝলমল করে উঠছে

অবিকল আলোর মতোই।

 

(৪৩)

প্রত্যেক মোড়েই আছে দুটি নাম,

যদি তাকে ভালোবাসা বলতে না চাও,

তবে মরণ বলাই শ্রেয়।

 

(৪৪)

কেবল এইটুকু বলেই 

প্রতিটি সজল রাত্রি চলে যায়,

তোমার সুখের মুহূর্ত, দুঃখের সঙ্গী,

শুধু তোমারই শূন্য হাত।

 

(৪৫)

হ্যাঁ, কত কথা বলার ছিল,

কিন্তু অন্য কিছু ঘটে গেল।

শুধু চোখে চোখ রেখে

সারাটা রাত ফুরিয়ে গেল।

 

(৪৬)

ফাঁসির মঞ্চ থেকে হৃদয় অব্দি

যত পথই অপূর্ণ থাক,

একবার যা চলে গিয়েছে,

তা বারবারই চলে যায়।

 

(৪৭)

আমার খোশ মেজাজের উপর

বসেছে রেওয়াজের কঠিন পাহারা।

জানি না কিসের আশা নিয়ে

বসে আছে মন!

তোমার চোখের তারায় ঝিলিক দিচ্ছে দুঃখ।

সেই দুঃখের দিব্যি কেটে বলছি

ভালোবেসে যে দুঃখ পেলাম বন্ধু,

দুঃখের মাঝে গড়ে ওঠা সেই সম্পর্ক

খুবই গভীর।

 

 

(৪৮)

ভেবেছিলাম, প্রাণ ভরে টানব

মনমাতানো সুগন্ধ।

রক্তের আর্তনাদকে দেখো

তা যেন ইন্দ্রধনু না হয়ে যায়!

 

(৪৯)

আল্লার দোহাই

আমার মতো কারো যেন না হয়!

আল্লার দোহাই

আমার মতো মনের অবস্থা কারো যেন না হয়!

 

(৫০)

যুগ তো অতীত।

যুগই আবার ভবিষ্যৎ।

বর্তমান, দৃষ্টিভ্রম ছাড়া আর কিছুই নয়।‌

যখন কোনো মুহূর্তকে স্পর্শ করতে চাই,

তখনই তা আমার হাত থেকে

পিছলে গিয়ে অতীত হয়ে যায়।


[​মীনা কুমারী ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের এক কিংবদন্তি অভিনেত্রী। তাঁর আসল নাম মাহজবীন বানো সিনেমা জগতে ট্রাজেডি কুইন হিসেবে তিনি বিশেষ পরিচিত ছিলেন। দাম্পত্যের ব্যর্থতার কারণে তাঁর মনে ছিল গভীর ক্ষত যন্ত্রণা, যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তাঁর কলমে। তিনি হয়ে উঠেছিলেন এক সত্যিকারের কবি। তাঁর জন্ম ১৯৩৩ সালে মুম্বাইয়ের দাদারে। মৃত্যু ১৯৭২ সালে। রচনা করেছেন অজস্র উর্দু শায়েরী। এখানে রইলো মাত্র দশটির অনুবাদ।​]​



1 টি মন্তব্য: