তীব্র ধূপের গন্ধে শ্বাস আটকে আসছে। ইন্দুবালা জ্বেলেছে।সন্ধ্যা। ধোঁয়া।ল্যামিনেটেড সারদা মা,লাল পাড়।পাশে পরমহংস।অস্বস্তি।বারান্দায় বেরিয়ে আসে ইন্দুবালা। মাঘের শেষেও বেশ ঠাণ্ডা। চাদর ছাড়া এলো দাঁড়িয়ে আরাম হচ্ছে এখন।সন্ধ্যার নিয়ন ঘিরে বদনাম করছে মথগুলো।ট্রেন চলে গেল। ভোরবেলা ঘুমটা আচমকাই ভেঙে নাছোড়বান্দা স্বপ্নট।
নির্জন গলিতে গড়িয়াহাটের ফুটপাতের প্লাস্টিক ফুলের মতো ফুটে আছে সাদা ফুল।
ইন্দুবালা তাকিয়ে আছেন শুনশান গলিপথে। সৌমেন্দ্র আসেনি কতদিন। একটা ট্রেন আর আরেকটা ট্রেন আসার মাঝে অন্ধকার একটুকরো প্রেম সমান্তরাল হারিয়ে গেছে।
পেতে ইচ্ছে করছে সৌমেন্দ্রকে।কিম্বা সৌমেন্দ্র নামের শরীর।অনেকদিন আসেনি সে।
চালসের চুলকানি বলে একে।
মাগো! এখনো কেন এত জাগরণ!
স্বপ্নটা ফিরে ফিরে আসছে।অস্বস্তি হচ্ছে।একটা বিছানা চাঁপা রঙের মেয়ে।নরম।
ছোঁয়াছুঁয়ি।কী ভালো লাগছে ডুবতে।পরক্ষণেই মিলিয়ে যাচ্ছে অন্য দৃশ্যে। সেখানে পাশে দাঁড়িয়ে আছে ফাঁকা প্ল্যাটফর্মের মতো একটা অস্পষ্ট বিবাহ যোগ। ইন্দুবালা ষাট।ইন্দুবালা বুঝতে পারে না বয়সের ব্যাপারটা।বিছানায় শুয়ে এখনো নিটোল বৃন্তে হাত সে বোলায় যত্নে।কিছুটা ঝুঁকে আছে।
নারীর স্তন অনেক ইতিহাস বহন করে।
বড়ো হয়ে ওঠার মুখে বালিকা বিদ্যালয়ের মাঠ।
ইন্দুবালার পুরুষ জেগেছিল কাল স্বপ্নের ভেতর।নারীর ভেতর লুকিয়ে থাকা পুরুষ।মেয়েটা আদর করছে।নিজেকে দেখা যাচ্ছে না।দৃশ্য পাল্টে ফের ঠোঁট পেতে দিচ্ছে সৌমেন্দ্র।ছোট্ট পাখি হয়ে বসছে ঠোঁটে,যেন ফ্রেঞ্চ কিস।
এই মফস্বলের জীবন ঘড়ির কাঁটা নয় ট্রেনের টাইমে চলে। ঝমঝম শব্দের দিন শুরু। শেষ ট্রেন বিষাদ ভরে নিয়ে যাবে। বাজারে দোকানে ভিড়। বেচাকেনা।
এত জীবন্ত স্বপ্ন! সারাদিন এঁটোর মত লেগে আছে।উষ্ণতা অস্থির করছে শরীর।
ওপর থেকে নিচ।হাত নামছে। ইন্দুবালাদের বয়স বাড়ে না।
স্বপ্ন খুঁজতে ট্রেনে।স্টেশন থেকে স্টেশনে।
একটা বারান্দা। পাশাপাশি স্বামী- স্ত্রী। অচেনা বাড়ি। ইন্দুবালা ঘরে এসে শরীর এলিয়ে দেয় বিছানায়।
ঘরে এল- ই-ডি বাল্ব জ্বলছে। ধূপ নেই। শুধু গন্ধটুকু পড়ে আছে।
পরবর্তী ট্রেন এগিয়ে আসছে ঝমঝম করে।
কবিতার মতো মরমী। করাতের মতো তীব্র।
উত্তরমুছুন