ডোবা আর ভাসার মাঝখানে
টিভিতে লাইভ বিতর্কে শেষ হওয়ার পর সবে গাড়িতে উঠেছি। তোমার ফোন। নিশ্চিত জানতাম। আমি ধরলাম না। তুমি কিন্তু আর দ্বিতীয় বার করলে না। তুমি তো আময় চেনো আমার থেকেও ভালো করে। মিনিট পাঁচেক পর আমার আঙুল প্রেস করছে তোমার নাম্বার। রিং হচ্ছে তোমার ফোনে। তুমি আমার ফোন রিসিভ করছ শান্ত ভাবে। যদিও গলার স্বর ঈষৎ গম্ভীর... বিতর্কে আমি তোমার বিরুদ্ধে যে তীব্র ভাষায় আঘাত চালিয়েছি সেটা কি তোমায় কষ্ট দিয়েছে? হয়তো তাই। কিন্তু তুমিও তো আমায় ছেড়ে দাও নি। আমার রাজনীতিকে, আমার ধর্মকে কটু কথা বলেছ লাইভ টিভিতে। তোমাদের নিজস্ব সঞ্চালক তোমায় মদত দিয়েছে প্রকাশ্যেই। তোমাদের দল, তোমাদের গোষ্ঠী ... ঘৃণা করি তোমাদের। কিন্তু তোমাকে? কয়েক মাস বাদে আমাদের এই শহরে এলে তুমি। কী করে তোমায় ফোন না করে থাকি? কী করে তোমার আহ্বানে সাড়া না দিয়ে পারি?
আমি ফ্ল্যাটে তোমার অপেক্ষায়। তুমি এলে কিছু পরেই। তারপর কোনো কথার প্রয়োজন হয় নি আমাদের, প্রতিবারের মতোই। এবারও তুমি আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে দেহ থেকে খুলে ফেললে তোমাদের নির্দিষ্ট চিহ্ন-সুতো। একেবারেই সুতোহীন তোমার দেহ আমার মধ্যে ঢেউ তুলছিলে বারংবার, আমি ডোবা ও ভাসার মধ্যে দুলতে দুলতেও দেখছিলাম তোমার ছুঁড়ে দেওয়া চিহ্ন-সুতো জড়িয়ে গেছে আমাদের নির্দিষ্ট শির-আচ্ছাদন বস্ত্রের সাথে। আজকে লাইভ অনুষ্ঠানে এই আচ্ছাদন বস্ত্র নিয়েই না ছিল আমাদের মূল বিবাদ? কী অদ্ভুত সমাপতন! আমি ভাবছিলাম, ডুবছিলাম আর ভাসছিলাম।
সব সাঙ্গ হলে তুমি ঘুমিয়ে পড়লে দ্রুত। আমার চোখে অনিদ্রা। আমি আস্তে আস্তে বের করি লুকোনো ভিডিও ক্যামেরাটি। সঙ্গমরত নিজেদের দেখি। আমাদের নিবিড় ডোবা আর ভাসা। না, উত্তেজিত হই না। শুধু দেখি। তারপর ডিলিট বোতামটায় হালকা চাপ দিই। দুটো অপশন।
'ইয়েস' না 'নো'?
'নো' না 'ইয়েস'?
তোমার তখন ঘুমের অতলে ডুব । মুখে স্মিত হাসি। তুমি কি স্বপ্নে আমায় ভাবছ?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন