শনিবার, ১ জানুয়ারী, ২০২২

সুবীর ঘোষ-এর ঝুরোগল্প

 

শূন্যতার সুরে

 

 

কূল ছেড়ে এসে মাঝদরিয়ায় পিছনের পানে চাই----আমাদের কালের একটি বহুশ্রুত গান কেউ বলেএরকম চাইতে নেই, মনটা হু হু করে ওঠে কেউ আবার বলে--- চাইতেই হয় নইলে কী করে বোঝা যাবে আমরা কোথায় ছিলাম আর কোথায় এলাম কিন্তু এই চাওয়া সহজ নয় চোখ ব্যথায় ফুলে ওঠে মন কাঁদতে কাঁদতে নিস্তেজ হয়ে যায় সবাই পাশে এসে দাঁড়ায় বলেসঙ্গে আছি কিন্তু সঙ্গে কতদূর থাকা যায় ! আনন্দবিহার থেকে যখন চলে এলাম নিজের হাতে লাগানো কান্নাহাসির দোল দোলানো সেই মাথা ছাড়ানো ঝাউগাছটাকে তুলে আনতে পারিনি তার কি কোনো রক্ষণাবেক্ষণের অধিকার ছিল না ? তার সাথিটিকে বাঁচাতে পারিনি মালী বলেছিল ---নিচে পাথর লেগেছে হবেও বা কিংবা এক তুমুল বর্ষার আন্দোলনের রাতে দীর্ঘকায় সন্তানবতী পেঁপেগাছটি পড়ো পড়ো এক তরুণী কাজের মেয়েকে নিয়ে ভিজতে ভিজতে তার দেহে বাঁধন পরিয়ে সে-গাছটিকে বাঁচিয়ে রাখি বর্ষার ধারাস্নানে সেই ময়নাপাড়ার মেয়েরও দেহের সমুদ্রে ওঠে বিপুল তরঙ্গ ব্যক্তি চলে যায় সেই বিপুল তরঙ্গও একদিন যায় থেমে ব্যক্তির জীবনে স্তব্ধতা নামে নানা গাছের তলা থেকে কুড়িয়ে আনা স্মৃতির ফলগুলি শুকিয়ে যায় ব্যক্তির স্তব্ধতা জুড়ে জুড়ে তৈরি হয় জগতের কোলাহল পুবের বারান্দায় আমার নীরবতাগুলো যাচাই করে দেখে নিতে আসে  পাখির দল তারা কোনো পরিচয়পত্র আনে না যে আজ আসে সে- যে দুবছর আগেও আসত আমার জানবার কোনো উপায় নেই পাখি চলে যায়... ঘর চলে যায়...পথও আমার আনন্দবিহার কোথাও এখনও আছে আমার থেকে অনেক দূরে ঘর তো কোথাও যেতে পারে না মনের ভেতর থেকে চলে যায় ঘর আমি নীল শূন্যতার সুরে স্তব্ধতার গান বাঁধি লোকে তাকে অকর্মণ্যতা বলে

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন