ভীমরতি কিংবা ছলনা
আপনমনে হাসছিল পিয়ালি।
কুন্তক বলে, হঠাৎ কী হলো ? চোখ মটকে পিয়ালি বলে, জানো তো ট্রাক - অটোর পিছনে লেখা থাকে 'দেখবি আর জ্বলবি / লুচির মতো ফুলবি।' সেটাই হবে এবার।
------ মানে ?
------ ফেসবুকে তোমার আমার হনিমুনের ছবি পোস্ট করছি।
------ ভালো তো।
------ কিন্তু একজন দেখেই জ্বলবে রাগে, দুঃখে।
------ কে সে ? প্রেমিক নাকি ?
------ আছে, আছে। চোখ নাচিয়ে মুচকি হাসে পিয়ালি।
ঠিক তখনই তার মোবাইল ফোন বেজে ওঠে। স্ক্রিনে চোখ রেখে , ঠোঁটে আঙুল দিয়ে পিয়ালি বলে, এ্যাই চুপ। আমার গানের স্যার ফোন করেছেন।
------ হ্যালো স্যার। কেমন আছেন ?
------ তোমার কী খবর বলো ? বিয়ের পরে সাড়াশব্দ পাই না। মনে হচ্ছে কপোত - কপোতী সুখেই আছো।
দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, আর সুখ ? কী যে বলেন স্যার।
------ সে কি ? এই তো দু' তিন মাস বিয়ে হলো। কিছু কি ঘটেছে ?
------ নাঃ, তেমন কিছু না। বাদ দিন। আমি আমিই।
------ এভাবে কেন বলছো। জানো, তোমার সঙ্গে কতদিন দেখা হয় না, কথা হয় না, ভালো লাগে না।
------ সে কি ! গান করেন না ? শেখান না ?
------ না, আর শেখাই না। গানেও অরুচি এসেছে।
------ স্যার, এমন করবেন না। গান তো আপনার প্রাণ
------ তা-ই নাকি ? আমি জানতাম তুমিই আমার প্রাণ।
পিয়ালি হিঃ হিঃ হাসে।
------ হাসি নয় পিউ। সত্যি তোমার জন্য বড্ড ভাবি।
------ জানি তো। আমি যে কী দমবন্ধ অবস্থায় আছি বোঝাতে পারব না স্যার।
------ সত্যিই ? পুজো কেমন কাটালে ?
------ আর পুজো। সেইসব দিন ভুলে যান।
এবার স্যারের গলা আবেগে, দুঃখে কেঁপে যায়।বলেন পিউ, তোমার এমন পরিণতি ভাবিনি। কীভাবে যে তোমার মুখে হাসি আনি ভাবছি। যাবো তোমার বাড়ি ? কত কথা জমে আছে। যাবো ?
------ না - না। পাগলামি করবেন না। পরে সব বলব। আজ ফোন রাখি। বা-ই।
কুন্তকের দিকে তাকিয়ে হেসে পিয়ালি বলে, কেমন দুঃখী মেয়ের ভাব দেখালাম, বলো ? উনি এটাই চান। ভাবেন, ওঁর সঙ্গে থাকলেই বুঝি আমি ভালো থাকতাম। বুড়ো হলে মানুষের কত যে কাণ্ড হয়।
স্বামী - স্ত্রী দুজনেই হাসতে হাসতে বলে ওঠে, ভীমরতি !
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন