বৃহস্পতিবার, ১ জুলাই, ২০২১

উমাপদ কর-এর কবিতা


শিরোনাম থাকতে হবে এমন কোনও কথা নেই

 

                                             

 

ফুল তুলতে কাঁটার ঘা। কাঁটার ক্ষত নিয়ে ফুল তোলা। পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত এই দুটো বাক্য নিয়ে  ভাবতে থাকি।

 

ফুল কাঁটা সম্পর্কে থেকেও, দূরত্ব রাখে। হাত একটি চেনা বুঝদার মাধ্যম হয়ে এদের দূরত্ব ঘোচায়। আমাদের কোটের বুকে অর্ধেকটা বেরিয়ে থাকা ফুল হাতের আঁচড়ের দিকে কোনো খেয়ালই রাখে না। লোকের দিকে ড্যাবড্যাবিয়ে তাকায়। ফুল নিজের মৃত্যুটাকে ্যালিশ করে আরো কিছুটা বেঁচে নেয়। ফুল কাঁটাকেও মনে রাখে না। তারই মৃত্যু ঠেকাতে যে নাকি হাতকে আঘাত করেছিল। হাত মনে রাখতে বাধ্য হয় কাঁটাকে, অনেকটা সময়, যতক্ষণ না মলম ক্ষতকে নির্মূল।

 

কাঁটাটা কখনো মরে। কখনো মরো-মরো বেঁচে থাকে। জন্মদাত্রী গাছটা তখনও বেঁচে যে! জোর আঘাত করলে হাতের মাস-রক্তের সঙ্গে সে স্বর্গে যায়। আর অল্প আঘাতে নিজের হুলটা খতম করে নির্জীব বেঁচে থাকে। ফুলের জন্য দুঃখটা তার মরে না। আমৃত্যু একটা কষ্টবোধ তাকে বিষাদগ্রস্ত করে তোলে। সবটাই অনুভব করে গাছ, কিন্তু বলে না কিছুই।

 

ফুলের পাপড়িগুলো খসে না-পড়া পর্যন্ত বুকের ফুল ফুলদানিতে বাস করে। আহ্লাদে তার ধরে না। যতদিন বাঁচে, আনন্দে বাঁচে। হাতের মাংসে জড়ানো কাঁটা আস্তাকুড়ে যায় কোনোরকম শোকসভা ছাড়া। গাছে অর্ধমৃত কাঁটা রিকেট হতে থাকে ঠিকমতো রসের যোগান না-পাওয়ায়। যতক্ষণ বা যতদিন বেঁচে থাকে, আনন্দে থাকতে পারে না।

 

দুজনেই নিজের কাজটা ঠিকঠাক সারে, এমনকি মধ্যমণি হাতটাও। তবু কেন যে ভাবতে ভাবতে আমি কাঁটার দিকেই ঝুঁকে পড়ি, ব্যাখ্যা করে বলতে পারব না।

 

(এখানে শুধুমাত্র সেই ফুলগাছের কথা ভাবা হয়েছে, যার কাঁটা আর ফুল দুটোই আছে, আর ফুলগুলো মোহিনী। নয়তো হাত কেন ব্যস্ত হয়ে উঠবে!)

 

১৬-০৯-২০২০

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন