বনলতা প্রিয়তমাসু
দূরে কি মেসবাড়ি,চিলেকোঠার ভাড়াটে কামরা, ক্ষয়াটে শহর!
ছাদের
বিষণ্ণ
আলসেয়
অলস কাকেদের
ওড়াউড়ি...
নিচে
দুপুরের
রোদে
কিলবিল ট্রামপথ; এবড়ো- খেবড়ো পিচ, ঝোলা কাঁধে বইপাড়ামুখী দ্রুতগামী পড়ুয়ার দল...
এই অলস রোদভরা ছাদে পাইস-রেস্তোরাঁর ভাত নেভানো চুরুট আর কবিতার খাতা--
সকালে হঠাৎ মুখোমুখি মেয়েটির বোনের। আত্মজার হাত ধরে রাস্তা পার হচ্ছে... অবাক দুই চোখে
নাটোরের সেইসব পাখিদের নীড়
এক গন্তব্যে
বেরোলেও
সব পাখি
শেষ পর্যন্ত
ঘরে ফেরে
না
কুয়াশার ঘন আড়ালে স্থির হয়ে যায় কোনও কোনও নদী
অনিশ্চিত জীবিকা যন্ত্রণায় কেউ কেউ ঘোরে এ শহর ও শহর
ভাড়াটে ঘরের কার্নিশে ম্লান ছায়া মরা জ্যোৎস্নার
অথচ মর্গের
দম চাপা
ভ্যাপসা
গন্ধ
কাঠের
ট্রেতে
শুইয়ে
রাখে
অসুখী
দাম্পত্য
সারাদিন সোনালি আকাশে চক্রাকারে ঘোরে নির্বিকার চিল
ধূসর অ্যালবামে ক্রমশ স্পষ্টতর হয় কলোনির ভাঙা চাঁদ
এই ঘুমে ভাড়াটে ঘরের ভেতর হাওয়া আরো ঘন হয়ে এলে
বিপন্ন বিস্ময়ে বাকি থেকে যায় কিছু লেন-দেন
জীবনের নাগরিক সমুদ্র সফেন
সেই ছায়াপিণ্ড
একা জেগে
থাকেন
রাত থেকে
ভোর
আপন মুদ্রাদোষই
কবিকে
ছায়াপিন্ডের
থেকে
আলাদা
করে দেয়
নিরন্তর
অর্থ চাই কীর্তি চাই স্বচ্ছলতা চাই... এই বোধ এতদিনে মাথার ভেতর জন্ম নেয় সুপরামর্শ হয়ে; ধানসিড়ি নদী পেরিয়ে
কাশবন নতুন শহর!
ভাড়াটে কামরা নিঃসঙ্গ অন্ধকারে সহসা ডুবে যায়...
সেদিনের বনলতা সেন হাতে তুলে নেয় ডায়েরির পাতা, ল্যাপটপ
তার ফোন বেজে যায়... ঘনঘন... মিসড কল...
কে ডাকে আট বছর পর এত রাতে, বনলতা সহসা চঞ্চল
মোবাইলের উজ্জল স্ক্রিনে ফুটে ওঠে দুইটি দগ্ধ লাইন
' জীবনানন্দ কলিং'--- ফেব্রুয়ারির মরা জ্যোৎস্নায়
সহসা ঝলসে ওঠে অক্টোবরে রক্তাক্ত ট্রামের লাইন
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন