শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

প্রদীপ চক্রবর্তী-র কবিতা

আকালের সন্ধানে যে গ্রাম 
( উৎসর্গ :  মৃণাল সেন) 

দৃশ্যদৃশ্যান্তর অন্নদানগর সবরকম জৈবঘটিত ফলাফল এখন বন্ধ|
বিস্তৃত কেউ দাঁড়িয়ে| কয়েকজন অপরিচিত| তবু তো শুরু হবে আলোড়িত জলের আকস্মিক ছায়ায় নিরুদ্দেশ সংবাদ| কয়েকজন 
বললেনও, এখানেই শুরু হয়েছিল মৃণাল সেনের "আকালের সন্ধানে" সিনেমার শুটিং | স্মিতা পাটিলের করতলভরা পলাশ তারই তো দেওয়া| ভিড়ের ভেতর থেকে বলতে বলতে ছেলের পাওয়া সবুজসাথী সাইকেল থেকে নেমে যে এলো তাকে দেখে চমকে গেলাম | এই চারদেয়ালে  বানভাসিদের একজন | প্রাচী কারুশিল্পের কিশোরীলাল | 
চেনামুখ, ছুপারুস্তম! 


মাটির ওপর গুটিকয় রংতুলি |  শূন্য সিঁড়ির জানলা দিয়ে সারিসারি কাঁচে টুকরো  আলো | একটা  অফলন্ত ভাবনার ফোঁটায় চলেছি |  নিশি ফুরনোর আগে কত পাখি ক্লাস পেরোয় আলো কমে কমে | চাঞ্চল্যজনিত নরম নখের গন্ধ, রুমালে সুমুদ্রিত ঘৃণা কার এবং কেন? সেই প্রশ্ন, খুব সামান্য সজল গণছবির ছায়াকলরোলে | কত কিছুরই তো বদল ঘটেছে | বাচাল বাড়ি,  ধানখেত, হুকে - আঁটা  জামার দেহ নেই | বলতে বলতে লোকটার চোখে  পড়ে ঘরময় লোহার জন্তুরা আদুল শ্যাওলাময় | কাঠের ভেতর থমকে আছেন  মৃণাল | ট্রপিক্যাল জল নামছে কাঠের জানলা বেয়ে ۔۔۔۔


সুবর্ণগোলক 

ফুল যেতে পারে স্ফুটিত |  আলোমতো যোগিয়াশুদ্ধ যেতে পারে , হারায়নি বাগিচা কিছুই | তার তাকে কুড়িয়ে বুঝে নেবে কে কার সমূহ 

যে সংকেত বিসর্জিত ,
ঘুণজুড়ে আদলে গড়া আরও লাগে 
বাদলে , অবসৈকতে 
তারপর ঢের থেকে খোলা 
নারকেল পর্যন্ত বাগানে শোঁ শোঁ করছে 
হাওয়া আঁকা চল - সমীর 

কারা যেন রক্ত গড়ালেও প্রশ্ন করে নি ,
দেবতার থানে সন্তর্পনে বেঁধে দিয়ে আসে ঢিল ,   
নিরালা ক্ষীরনহর 
কতকষ্টে কালাচাঁদ বাঁশি ছেড়ে বন্দুক কিনেছে 
টোটা এক ডজন 


সেভেন পয়েন্ট ক্রসিং

মরীচিকার লয় মেখে তোমাকে আঙুলের নিষিদ্ধ কাঁটাতার , মৃত্যুর কাছাকাছি এসে প্রতিবার রক্তের ফোঁটাফোঁটা শিশির মাখিয়েছে কেবল | অলীক  হিমখাদে সহস্র খন্ডে ছড়িয়ে এই
 প্রতিহাওয়ায় পেঁজা পেঁজা তুলো তুলো মেঘ  ঊষা অরুণার দ্বিগ্বিদিকে ছড়িয়ে  পড়ে | 
তুমি কি বৃষ্টির রংতুলিতে  নৈঃশব্দের  ভেদরেখায় নিজেকে লুকোতে চাও ? অমানুষ উপাখ্যানে ভারী হচ্ছে আরশিনগর ! 

বহু ব্যবহারে ডোমউল্লাস ভাঙছে আগুনের ঘুম | রক্তাক্ত ক্ষুধার্ত প্রহেলিকা আর একটি রাত্রিতরু |
বর্ণমোহরের  আলো নিভিয়ে  শীলাভট্টারিকা বহুকাল যেন বা ঘুমোচ্ছে | হয়তো বিন্দুর মতো কিছুটা নিষ্প্রভ অব্যবহৃত ছায়ার মানুষ | ছায়ার বরতনুখানি শত চিৎকারে  উজার করে দিয়েছে 
অন্ধমানুষের পদঘুঙরু ...


 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন