শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০২২

জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়-এর ঝুরোগল্প

বন্ধু 

--  বসুন ম্যাম। কাগজে কিছু দেখতে দেখতে না তাকিয়েই বললেন মিস।
-- আপনার ছেলেটি স্লো-লার্নার,একটু স্পেশাল কেয়ার নেওয়া -- বলেই তাকালেন আর চমকে
একেবারে উঠে দাঁড়ালেন মিস।
ম্যামও তখন দাঁড়িয়ে গ্যাছেন।
-- তুই ! তুই বাবুর ক্লাস টিচার?
-- আর তুই শান্তর মা?
দুজনে দুজনের হাত চেপে ধরেছেন।
দুজনে সংসার করতে চলে যাওয়ার পর কিছুদিন যোগাযোগ ছিল,তারপর বিচ্ছিন্ন।সাদামাঠা
এই গল্পে একজন দাদা ছিলেন যিনি দুজনকেই পছন্দ করতেন,ভালোবাসা জাতীয় কিছু
অনুভূতিও হয়তো ছিল,তবে তা টানাটানির ত্রিকোণ তৈরি করেনি।
অদ্ভুত একটা মিল দুজনের জীবনে ঘটে,দুজনেই পতিদের হারিয়েছেন।স্বাতীর বর
ছিলেন সরকারি কর্মচারী, তাই ডায়েড -ইন- হারনেস গ্রাউন্ডে অফিসে চাকরি পেয়েছেন
স্বাতী,আর শিখার বর ধনী ব্যবসায়ী ছিলেন,কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর সব কেমন বদলে যায়,তিনি এখন
বেসরকারি এই স্কুলে অল্প বেতনের শিক্ষিকা।সন্তান নেই,একা ছোটো একটা কম ভাড়ার ঘরে থাকেন।
টিফিন টাইমে দুজনে মুখোমুখি,পাশে শান্ত চাউমিন খাচ্ছে,ওঁরা চা।
স্বাতীর দরকার একজন দরদি শিক্ষিকা আর শিখার একটা পারিবারিক পরিবেশ।
দুজনেরই প্রয়োজন কোনো বিশ্বস্ত বন্ধু।কেরানির চাকরিতে ছেলেকে সময় দেওয়া সম্ভব নয়।
অফিসের একজন স্টাফ স্ল্যাং ইউজ করে স্বাতীকে উত্যক্ত করতে চেষ্টা করেন।
মনের কথা বলার একজন সঙ্গী তো চাই,দুজনেরই।
চার হাত আবার এক হয়,
নির্ভরতার বন্ধন স্পষ্ট।


 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন