সতীচ্ছদ
ছাত্রটি দুই অতিথি-বক্তাকে জীবনশৈলীর সেমিনারে জিগ্যেস করলো, আপনাদের সতীচ্ছদ ছেঁড়ার ঘটনা বলবেন? বড্ডো ইচ্ছে করছে শুনতে। ব্যাপারটা কি নৈতিকতার? যখন যুবতীদের নৈতিকতা সম্পর্কে শেখানো হয়, তখন প্রায়ই সহানুভূতি, দয়া, সাহস বা সততার কথা বলা হয় না। বলা হয় সতীচ্ছদ বা যোনিচ্ছদ নিয়ে । আমি বাবার সঙ্গে আরব দেশগুলোতে গেছি । সতীচ্ছদের দেবতা আরব দেশগুলোতে জনপ্রিয়। আপনি ঈশ্বরে বিশ্বাস করুন বা গোপন নাস্তিক হন, কোন ধর্মের তা বিবেচ্য নয়, পুরুষরা প্রত্যেকেই সতীচ্ছদের দেবতার পূজা করে। সতীচ্ছদ, যা সবচেয়ে অপলকা অংশ, যার ওপর কুমারীত্বের দেবতা বসে আছেন, তাকে অক্ষত রাখার জন্য যা কিছু সম্ভব করে ওদের দেশের কর্তাবাবারা৷ সতীচ্ছদের দেবতার বেদিতে, কেবল মেয়েদের শারীরিক পরিপূর্ণতা আর আনন্দের অধিকারই নয়, যৌন নিষেধের মুখে তাদের ন্যায়বিচারের অধিকারকেও বলি দেয়া হয় । কখনও কখনও তাদের বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নেয়া হয়, সম্মানের নামে । অনেক পরিবার তো তাদের মেয়েদের মেরেও ফ্যালে, জাস্ট সতীচ্ছদের দেবতাকে সন্তুষ্ট রাখবার জন্য। পুরো সমাজ মনে হয় একটা পাতলা সতীচ্ছদের ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
সঞ্চালক নন্দিনী ধর, যিনি দুজন বক্তার সঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি বললেন, "বাহ, ইট ইজ আ গুড কোয়েশ্চেন; আমার সতীচ্ছদ আজও ছেঁড়েনি, আমি ভার্জিন।"
হলঘরে সবাই ছাত্রটির প্রশ্নে প্রথমে অবাক, কেননা সবাই জানে ও মেধাবী বইপোকা, আর জীবনে একদিন নিশ্চয়ই কেউকেটা হবে, তারপর প্রশ্নটার আক্রমণাত্ক গুরুত্ব টের পেয়ে ছাত্ররা হেসে উঠলো। কেবল ছাত্রীরা ওর দিকে এমনভাবে তাকালো, যার অর্থ, ‘বাইরে চল, আমরা সবাই মিলে চটিপেটা করে তোকে বোঝাবো সতীচ্ছদ ছেঁড়া কাকে বলে; মেয়েদের তো ঘেঁষতে দিস না কাছে, ব্যাটা মানিক বাঁড়ুজ্যের শশী।’
অদ্ভুত অনবদ্য একটা রূপক।
উত্তরমুছুন