রবীন্দ্রকাব্যে নারী
১৯২৯ সালে প্রকাশিত ‘মহুয়া’ কাব্যগ্রন্থের ‘সবলা’ রবীন্দ্রনাথের একটি বিখ্যাত কবিতা যার প্রথম পংক্তি কটি সর্বদা উদ্ধৃত হতে হতে নারী যে এই কবিতায় ঠিক কোন ভাগ্য জয় করতে চায় বলে কবি ভাবেন সেটা অনেকটাই চাপা পড়ে গেছে। এই কবিতাটিকে আজকের দিনেও বহু নারী বিশেষভাবে নারীর ক্ষমতায়নের কবিতা বলে মনে করেন। এখানেও কিন্তু নারী প্রিয় মানুষটিকেই লাভ করতে চায়, অন্য কোনো লক্ষ্য তার নেই। একমাত্র কথা, এখানে সে বরণীয় পুরুষকে লজ্জানতভাবে নয়, দৃপ্ত অকুন্ঠ সমর্পণের পথে লাভ করতে চায়ঃ
বিনম্র দীনতা
সম্মানের যোগ্য নহে তার
ফেলে দেব আচ্ছাদন দুর্বল লজ্জার।
সে বলে,
যাব না বাসরকক্ষে বধূবেশে বাজায়ে কিঙ্কিণী
আমারে প্রেমের বীর্যে করো অশঙ্কিণী
কবিতার শেষ পর্বে তো স্পষ্টই বলা হয়,
যাহা মোর অনির্বচনীয়
তারে যেন চিত্ত-মাঝে পায় মোর প্রিয়।
নারীর বলের আকাঙ্ক্ষা তবে এইটুকু মাত্র যে মুক্তকন্ঠে প্রেমাস্পদকে আহ্বান করবে, দীনভাবে নয়। আমরা দেখতে পাই যে ‘সবলা’ কবিতার বক্তা আর ‘সাধারণ মেয়ে’ কবিতার মেয়েটির আকাঙ্ক্ষা একই। দুজনেই প্রেমাস্পদকে লাভ করতে চায়, তার কাছে সম্মান দাবি করতে চায়। নারী কোনও বৃহৎ কর্মযজ্ঞে অংশ নেবে বলে, আপনি আপনাতে সম্পূর্ণ হবে বলে ঈশ্বরের কাছে আবেদন করছে না, কেবল একটু সম্মানের সঙ্গে প্রেমাস্পদের সঙ্গে মিলিত হতে চায়! সে অশঙ্কিণী কিসে, না কেবল ‘প্রেমের বীর্যে’। আজকের দিনের মেয়ের কাছে ‘সবলা’ শব্দটির ব্যঞ্জনা যে বিস্তৃততর সেটুকু সকলেই মানবেন। এছাড়াও কথা আছে। প্রথম পংক্তিতে নারী বলছেন,
নারীকে আপন ভাগ্য জয় করিবার
কেন নাহি দিবে অধিকার?
অধিকার তো চেয়ে নেবার বস্তু নয়, নিজের ভাগ্য নিজে জয় করতে হলে নিজের অধিকার কেড়ে নিতে হয়। একথা নারীবাদী সংগ্রামীর দল প্রমাণ করে গেছেন সারা বিশ্বে! আজ আমরা আর রবীন্দ্রনাথের এই সবলার মধ্যে বিশেষ কোনো বল দেখতে পাই না।
পরিণত বয়সের কিছু কবিতায় আমরা যেখানে সামাজিক সমস্যার প্রতিফলন দেখি সেখানে কিন্তু রবীন্দ্রনাথের দেখার চোখ আমাদের বিস্মিত করে। যে কোনো সমস্যার এমন গভীরে তিনি চলে যান যে আমরা মুগ্ধ বিস্ময়ে ভাবি তাঁর মতো ব্রাহ্মঘরের উচ্চকোটির মানুষ হিন্দুসমাজের সামাজিক এবং ঘরোয়া সমস্যার সঙ্গে এমনভাবে পরিচিত হলেন কিভাবে। এর সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই মেয়েদের প্রসঙ্গ আসে। যেমন হিন্দুসমাজে অল্পবয়সী বিধবার সমস্যা ‘পলাতকা’-র ‘নিষ্কৃতি’ কবিতার বিষয়বস্তু। কবিতাটি যেন তখনকার হিন্দু সমাজে নারীর উপর অন্যায় বিধিনিষেধ ও হিন্দু বিধবার অবর্ণনীয় অবস্থার দর্পণ। জলপানি পাওয়া যুবক ডাক্তার পুলিন পাড়ার ছেলে। মঞ্জুলিকার মা তার সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতে চাইলে বাবা সে কথা বাতিল করেন কারণ পুলিন কুলীন নয়। তার বদলে তার মায়ের চোখের জল উপেক্ষা করে মঞ্জুলিকাকে তিনি এক বৃদ্ধ কুলীন পাত্রের সঙ্গে বিয়ে দিলেন। দুমাস যেতেই বিধবা হয়ে মঞ্জুলিকা বাপের বাড়ি ফিরে এলে মেয়ের বৈধব্য সহ্য না করতে পেরে মঞ্জুলিকার মা স্বর্গে গেলেন। তিনি মঞ্জুলিকার বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বাবা সে কথা হেসেই উড়িয়ে দেন। মায়ের মৃত্যুর পর বাবার সেবায় মঞ্জুলিকার গোটা দিন কাটে, খাওয়ার বিশাল ফর্দ তাঁর, এদিকে তার নিজের নিরামিষ একাহার। এর মধ্যে বাবার শরীর খারাপ, মঞ্জুলিকার বয়স ‘ভরা ষোল’, পুলিন ডাক্তার হিসেবে তাদের বাড়িতে এসে তাকে আড়ালে ডেকে বলে,
তোমার মায়ের সাধ ছিল এই চিতে
মোদের দোঁহার বিয়ে দিতে’।
মঞ্জুলিকা সে কথায় ছি ছি করে ওঠে, কিন্তু কদিন পরেই তার বাবা বিয়ে করার জন্য পাগল হয়ে ওঠেন। মঞ্জুলিকা তখন ‘ছেড়ে লজ্জা ভয়’ বাবাকে এসে বলে, বাবা এইবয়সে বিয়ে করলে ছেলেমেয়ে, নাতিনাতনি সবার মাথা হেঁট হবে। জবাবে বাবা চিরকালীন পুরুষতন্ত্রের বুলি আওড়ান,
"কঠিন আমি কেই বা জানে না সে?
আমার পক্ষে বিয়ে করা বিষম কঠোর কর্ম,
কিন্তু গৃহধর্ম
স্ত্রী না হলে অপূর্ণ যে রয়
মনু হতে মহাভারত সকল শাস্ত্রে কয়।
সহজ তো নয় ধর্মপথে হাঁটা,
এ তো কেবল হৃদয় নিয়ে নয়কো কাঁদাকাটা।
যে করে ভয় দুঃখ নিতে দুঃখ দিতে
সে কাপুরুষ কেনই আসে পৃথিবীতে।"
পুরুষের জন্য এক নিয়ম, নারীর জন্য অন্য নিয়ম। এভাবেই তো জগৎ চলছে পুরুষতন্ত্রের নিয়মে। সেইসময়ের মেয়েরা এসবও মেনে নিতেন, কিন্তু মঞ্জুলিকা অন্যধরণের মেয়ে। সেই সময় কঠোর পিতৃতান্ত্রিক শাসনে বড় হওয়া মেয়ে হয়েও সে বাবাকে তাঁর অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস রাখে। এই সাহসই তাকে বিশিষ্ট করে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে যে মুখ খোলে সেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহস রাখে। মঞ্জুলিকাও অন্যায় মেনে নেয় না, বাবা বিয়ে করতে গেলে সে প্রত্যক্ষ বিদ্রোহ করে সমাজের অন্যায় শাসনের বিরুদ্ধে। পুলিনকে বিয়ে করে ফারাক্কাবাদ চলে যায় সে।
কবিতাটিতে হিন্দুসমাজে পুরুষতন্ত্রের হীনতম চেহারা ধরা পড়ে। কিন্তু নিজে হিন্দুসমাজের মানুষ হয়ে অন্ততঃ এটুকু বলতে পারি যে এ চিত্রের কোনোখানে কোনো দৃষ্টির অস্বচ্ছতা চোখে পড়ে না। এমন বাস্তব ছবি বোধহয় রবীন্দ্রনাথ এখানে ছাড়া কেবল ‘গল্পগুচ্ছে’র কাহিনিগুলিতেই এঁকেছেন। পিতৃতন্ত্রের ভন্ডামির মুখোশ খুলে এই কবিতায় কবি তার কদর্যতম রূপটি প্রকাশ করেছেন। এখানে মঞ্জুলিকার চরিত্রটি অসামান্য হয়ে ওঠে। নিয়ম-নিগড়ে বাঁধা হিন্দুধর্মের আদর্শ বাধ্য মেয়ে সে। বাবা বুড়ো বরের হাতে তুলে দিলে সে কিছু বলে না। বৈধব্যের যন্ত্রণায় তাকে কাতর হতে দেখি না। সব নিয়ম নিষ্ঠা মেনে সে কায়মনোবাক্যে বাবার সেবা করে। বাবা ত্রুটি ধরলে খুশি হয়ে ভাবে, মায়ের মতো করে কে তাঁর সেবা করতে পারবে? পুলিনের প্রতি সে আকৃষ্ট হলেও পুলিন চাইলেও এই অসহ্য অবস্থা থেকে মুক্তির কথা সে ভাবে না। হিন্দুধর্মের কঠোর বিধিনিষেধ মেনেই সে জীবন কাটিয়ে দিতে রাজি। কিন্তু অমানবিকতাকে সে মেনে নিতে পারে না। তার বাবার স্বরূপ প্রকাশ পায় যখন, যখন সে দেখে যে তিনি তার মাকে ভুলতে বসেছেন, তখন তার মনে বিদ্রোহ জাগে। অবশেষে সে পুরুষতন্ত্রের নিজস্ব রূপটি উপলব্ধি করে, তার বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট বিদ্রোহ করে। সমাজের রক্তচক্ষুকে সে শেষপর্যন্ত উপেক্ষা করবার সাহস করে, আর এখানেই তার জয়। এইসব মেয়েদের উপর করুণা ও শ্রদ্ধাই হয়তো এখানে কবির কলমকে এমন আশ্চর্য সাফল্য দিয়েছে।
এখানে আর একটি কথা বলার আছে। এই কবিতাটি ‘পলাতকা’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। ‘পলাতকা’ প্রকাশিত হয় ১৯১৮ সালে। এর আগে ১৯০১ সালে প্রকাশিত ‘চোখের বালি’, এবং তার অনেক পরে ১৯১৬ সালে প্রকাশিত ‘চতুরঙ্গ’ উপন্যাসে বিনোদিনী বা ননীবালা দুজন বিধবা নারীকে দেখি। বিনোদিনী প্রায় কোনো কারণ ছাড়াই বিহারীকে বিয়ে করে না, আর ননীবালা ভারতীয় নারীর আদর্শ রক্ষা করে, পাপিষ্ঠকে ভালোবেসে দ্বিতীয়বার বিয়ে না করে মৃত্যুবরণ করে। একমাত্র বিদ্রোহিণী দামিনী শেষপর্যন্ত বিয়ে করে। মঞ্জুলিকা দামিনীর মতোই এক বিদ্রোহিণী নারী যে বিধবা হয়েও বিয়ে করবার সাহস রাখে। সমাজের অন্যায় শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী পদক্ষেপ হিসাবে মঞ্জুলিকার বিয়ে এই কবিতায় এক বিশেষ তাৎপর্য পেয়ে যায়।
এক অসামান্য কবিতা ‘পলাতকা’ কাব্যগ্রন্থের ‘মুক্তি’। কবির করুণার রসে সিক্ত এ কবিতায় এক অনন্য মায়া সৃষ্টি হয় অসুস্থ এক গৃহবধূর বঞ্চিত জীবনের কাহিনিতে। এই ছবিই তখনকার বাঙালি ঘরের মেয়েদের জীবনের প্রকৃত ছবি। অল্পবয়সে বিয়ে হয়ে পরের ঘরে এসে এক নিষ্ঠুর নির্মম পরিবেশে স্নেহমায়া বঞ্চিত মেয়েদের কেবল সারাদিন ঘরের কাজ করা ছাড়া আর তো কিছুই ছিল না জীবনে। মাথা নিচু করে সব সহ্য করাতেই তাঁদের প্রশংসা হতো,
নামিয়ে চক্ষু, মাথায় ঘোমটা টেনে,
বাইশ বছর কাটিয়ে দিলেম এই তোমাদের ঘরে।
তাই তো ঘরে পরে,
সবাই আমায় বললে লক্ষ্মী সতী,
ভালোমানুষ অতি!
অসুস্থ হয়ে জীবনের শেষপ্রান্তে এসে তাই বধূটি আর এমন জীবনের ভার টেনে চলতে চায় না। জীবনের আসল রূপটি তার কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে, তাই তার মুখ দিয়ে দরদী কবি বলেন,
একটানা এক ক্লান্ত সুরে
কাজের চাকা চলছে ঘুরে ঘুরে।
বাইশ বছর রয়েছি সেই এক-চাকাতেই বাঁধা
পাকের ঘোরে আঁধা।
জানি নাই তো আমি যে কী, জানি নাই এ বৃহৎ বসুন্ধরা
কী অর্থে যে ভরা।
বাংলার সব গৃহবধূর মর্মের বাণী যেন এখানে সুরে বেজে ওঠে। এই অসহনীয় জীবনের যে ব্যথা তার করুণা রবীন্দ্রনাথের মনকে গেভীরভাবে স্পর্শ করেছিল। ‘পলাতকা’-র ফাঁকি কবিতায় মৃত্যুপথযাত্রিণী তেইশ বছরের যুবতী গৃহবধূ জীবনে প্রথম মুক্তির স্বাদ পায় যখন সে হাওয়াবদলের জন্য স্বামীর সঙ্গে রেলগাড়িতে চড়ে ‘বিয়ের পরে ছাড়ল প্রথম শ্বশুরবাড়ি’। পরিবারের সবার মাঝখানে স্বামীর সঙ্গেও তার ঠিকমতো দেখা হতো না, তাই এবার কবির কথায়
আজকে হঠাৎ ধরিত্রী তার আকাশভরা সকল আলো ধরে
বরবধূরে নিলে বরণ করে।
রোগা মুখের মস্ত বড়ো দুটি চোখে
বিনুর যেন নতুন করে শুভদৃষ্টি হল নতুন লোকে।
সরলপ্রাণ মেয়েটির মধ্যে মুক্তির যে নির্মল আনন্দ তার মধ্যেই কবি তাঁর ব্যথাটুকু ফুটিয়ে তুলেছেন। বিনু আজ তাই যাকে দেখে তাকেই আপন বলে ভাবে, যে দুঃখের কাহিনি বলে তার দুঃখই ঘোচাতে চায়। অচেনা একটি দেহাতি মেয়ে তার দুঃখের কথা বলে তার কাছে বাইশ টাকা দাবি করলে সে তাকে সেই টাকাই দিতে চায়, সত্যি মিথ্যে যাচাই করবার প্রয়োজন বোধ করে না।
অথচ বিপরীত ছবিও তো আমরা পাই। কবির কলম যেন বিভিন্ন নারীর চরিত্রের বৈচিত্র্য ফুটিয়ে তোলে নানা ছবির মাধ্যমে। এই সরলপ্রাণ, কোমলহৃদয় নারীদের পাশেই তাই আমরা দেখি কাশীর মহিষীকে, যার করুণা নামের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে কঠিন ব্যঙ্গ। শীতের দিনে নদীতে স্নানের পর রানী শরীর গরম করতে চান নদীতীরের গরীব মানুষের কুটিরে আগুন জ্বালিয়ে। তাঁর এক সখী মানা করে, বলে,
"একি পরিহাস রানীমা!
আগুন জ্বালায়ে কেন দিবে নাশি?
এ কুটির কোন্ সাধু সন্ন্যাসী
কোন্ দীনজন কোন্ পরবাসী
বাঁধিয়াছে নাহি জানি মা!'
কিন্তু করুণার মনে এই সাবধানবাণী কেবল ক্রোধ জাগায়। সে এই ‘দীনদয়াময়ী’-কে দূর করে দেয়। তার অন্য সখীরাও রাণীর সঙ্গে এক বীভৎস নিষ্ঠুর খেলায় মেতে ওঠে।
অতি দুর্দাম কৌতুকরত
যৌবনমদে নিষ্ঠুর যত
যুবতীরা মিলি পাগলের মতো
আগুন লাগালো কুটিরে।
শীতের হাওয়ায় উৎসাহ পেল আগুন, গ্রাস করে নিল গোটা একটা গ্রাম। প্রমোদক্লান্ত রানী ঘরে ফিরে এলেন। দলে দলে প্রজা এসে রাজাকে দুঃখের কাহিনি শোনালে রাজা মহিষীকে জিজ্ঞেস করলেন প্রজার ঘর জ্বালিয়ে দিয়ে তিনি কেমন রাজধর্ম পালন করেছেন। রাণী জবাব দিলেন দৃপ্ত অবজ্ঞায়,
রুষিয়া কহিল রাজার মহিষী,
"গৃহ কহ তারে কী বোধে!
গেছে গুটিকত জীর্ণ কুটির,
কতটুকু ক্ষতি হয়েছে প্রাণীর?
কত ধন যায় রাজমহিষীর
এক প্রহরের প্রমোদে!'
রবীন্দ্রনাথ তো বিশ্বাস করতেন যে নারী হৃদয়ের সম্পদে ধনী। প্রবন্ধে তো সেই ভাবনারই আভাস আমরা পেয়েছি। কিন্তু বাস্তবে যে পুরো নারীজাতিকে একটা বিশেষ ধারণায় বেঁধে রাখা যায় না, নানাধরণের বিভিন্ন নারী যে তাদের মধ্যে আছে, এ কথা অন্ততঃ তিনি কখনওই ভোলেননি, অন্ততঃ তাঁর সৃষ্টির জগতে এমন একপেশে চিত্র আমরা দেখি না।
ক্রমশ...
ভালো লাগছে
উত্তরমুছুন