রবিবার, ১ আগস্ট, ২০২১

সুবীর ঘোষ-এর ঝুরোগল্প


 বন্দীমুক্তি

       মিলনবাবু ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করেছিলেনআপনি বলছেন আমার থাইরয়েড ঠিকমতন কাজ করছে না কিন্তু আমি তো কোনো অসুবিধা বুঝছি না   ডাক্তার বলেছিলেনআপনার শরীরকে ঠিকমতো চলতে বাধা দিচ্ছে মিলনবাবু চুপ করে গেলেন। যা বাব্বা , শরীরের অসুবিধা হলে বোঝা তো যেত কোনোই তো সমস্যা নেই ডাক্তার মিত্র একটি ওষুধ লিখে দিয়েছেন রোজ সকালে খালি পেটে খেতে হবে

     বাড়ি এসে নেট খুলে বসেছিলেন আজকাল তো স্মার্ট ফোনটাই হল গিয়ে এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা  নেট পড়েও যে খুব বেশি কিছু বুঝলেন মিলনবাবু এমন নয় থাইরয়েড হল প্রজাপতির মতো দেখতে একটা গ্ল্যান্ড , গলার উঁচু যে জায়গাকে আডাম আপেল বলে তার নীচে থাকে থাইরয়েড নানান হরমোন নির্গত করে যা সারা শরীরকে ভালো রাখে এর মধ্যে প্রধান হরমোনটি হল থাইরক্সিন বা টি ফোর

     মিলনবাবু নিয়ম করে সকাল সকাল ওষুধ খেয়ে যাচ্ছেন ভালো আছেন না খারাপ কিছুই বুঝতে পারেন না এক একটা শিশিতে একশোটা করে ট্যাবলেট থাকে মিলনবাবুর একশো দিনের কাজ তা সেই একশো দিনের আজ শেষ দিন পরের একশো দিনের ওষুধও কেনা আছে কাল থেকে শুরু হবে

     মুখে জল নিয়ে বড়িটাকে মুখগহ্বরের মধ্যে চালান করতে যাবেন এমন সময় মিলনবাবুর কানে এল কিছু কথা খুব ক্ষীণ কিন্তু বোঝা যায়   “কবে ওষুধ কারখানায় জন্ম আমার বছর ঘুরে গেছে গাদাগাদি করে জন্ম থেকেই কারাবাসে দিন কাটছিল তবু  ভালো যে জ্ঞাতিগোষ্ঠীরা ছিল কাল থেকে যে  একা অন্ধকূপে পড়ে আছি কারোর ভ্রূক্ষেপ নেই মানুষ বড়ো স্বার্থপর নিজেদের ভালোর জন্যে সবার ক্ষতি করতে পারে

 

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন