বন্দীমুক্তি
মিলনবাবু ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করেছিলেন—আপনি বলছেন আমার থাইরয়েড ঠিকমতন কাজ করছে না কিন্তু আমি তো কোনো অসুবিধা বুঝছি না । ডাক্তার বলেছিলেন—আপনার শরীরকে ঠিকমতো চলতে বাধা দিচ্ছে । মিলনবাবু চুপ করে গেলেন। যা বাব্বা , শরীরের অসুবিধা হলে বোঝা তো যেত । কোনোই তো সমস্যা নেই । ডাক্তার মিত্র একটি ওষুধ লিখে দিয়েছেন । রোজ সকালে খালি পেটে খেতে হবে ।
বাড়ি এসে নেট খুলে বসেছিলেন । আজকাল তো ঐ স্মার্ট ফোনটাই হল গিয়ে এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা । নেট পড়েও যে খুব বেশি কিছু বুঝলেন মিলনবাবু এমন নয় । থাইরয়েড হল প্রজাপতির মতো দেখতে একটা গ্ল্যান্ড , গলার উঁচু যে জায়গাকে আডাম’স আপেল বলে তার নীচে থাকে । থাইরয়েড নানান হরমোন নির্গত করে যা সারা শরীরকে ভালো রাখে । এর মধ্যে প্রধান হরমোনটি হল থাইরক্সিন বা টি ফোর ।
মিলনবাবু নিয়ম করে সকাল সকাল ওষুধ খেয়ে যাচ্ছেন । ভালো আছেন না খারাপ কিছুই বুঝতে পারেন না । এক একটা শিশিতে একশোটা করে ট্যাবলেট থাকে । মিলনবাবুর একশো দিনের কাজ । তা সেই একশো দিনের আজ শেষ দিন । পরের একশো দিনের ওষুধও কেনা আছে । কাল থেকে শুরু হবে ।
মুখে জল নিয়ে বড়িটাকে মুখগহ্বরের মধ্যে চালান করতে যাবেন এমন সময় মিলনবাবুর কানে এল কিছু কথা । খুব ক্ষীণ কিন্তু বোঝা যায় । “কবে ওষুধ কারখানায় জন্ম আমার । বছর ঘুরে গেছে । গাদাগাদি করে জন্ম থেকেই কারাবাসে দিন কাটছিল । তবু ভালো যে জ্ঞাতিগোষ্ঠীরা ছিল । কাল থেকে যে একা অন্ধকূপে পড়ে আছি কারোর ভ্রূক্ষেপ নেই । মানুষ বড়ো স্বার্থপর । নিজেদের ভালোর জন্যে সবার ক্ষতি করতে পারে” ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন