ঘুমের আয়না
(১)
হঠাৎ ট্র্যাফিক সিগন্যালের সামনে একটা জটলা। উঁকি মেরে দেখি, একটা স্কুটি চুরমার হয়ে গেছে। একটা ম্যাটাডোর ভ্যান জোরে ধাক্কা মেরে চলে গেছে। স্কুটি চালক বেঁচে নেই। একটু ঠেলে ভিতরে গিয়ে দেখি, স্কুটিটি ব্যাটারীচালিত,রঙ দেখে চেনা মনে হল। বডির সামনে যেতেই, আরে এতো বিজন বাবু। আমাদের পাশের ফ্ল্যাটের।
অবসর নেয়ার পর বিজনবাবু এই স্কুটিটি কেনেন।
বলেন : 'এটির স্পীড ঘন্টায় ২৫ কি.মি.। সাইকেলের বিকল্প। লাইসেন্স, তেল ভরার প্রয়োজন নেই। যদিও হেলমেট পরি, না পরলেও পুলিশ ধরবে না। ছেলে কাছাকাছি থাকলেও অন্যত্র থাকে। তাই আমাকে বাইরের সব কাজ করতে হয়। লোকাল কাজের জন্য ভাবলাম এই স্কুটিটাই কাজের। ইচ্ছে হলেই নাতনিকে দেখে আসি। সময় বাঁচে।'
অবসরের পর বিজনবাবু নানা কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। তাঁর প্রফেশনাল কাজ ছাড়াও ছিল লেখালেখির কাজ।
এই তো গতকালই দেখা।
বললাম : 'বেশ আছেন। এই বয়সেও স্কুটি চালিয়ে বেশ ঘুরে বেড়াচ্ছেন।"
-- 'ঘুরে বেড়ানোর জন্য এটা মোটেই না। এই তো এক ঘন্টার মধ্যে চারটে ব্যাঙ্কের কাজ ও বাজার সেরে চলে এলাম। এবার বাড়িতে গিয়ে কাজের মধ্যে ডুব। জানি না রাস্তায় যা সব রাস ড্রাইভিং! সময় বাঁচাতে গিয়ে শেষ অবধি নিজে বাঁচি কি না। ভালো থাকবেন।'
বিজনবাবুর সঙ্গে গতকাল আমার শেষ কথা।
(২)
হঠাৎ গিন্নির ডাকে ঘুম ভেঙে গেল। গিন্নি বলে: 'কি হলো ? ওঠো, এ অবেলায় আর ঘুমিও না। তাছাড়া তুমি বলছিলে না, নাতনির কাছে যাবে?স্কুটিতে চার্জ দিতে হবে তো'।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন