জলযান
সেদিনও অন্ধকার ছিল প্রথম প্রথম। ঘুমিয়ে ছিলাম তখনও। আমার বাপ ঠাকুরদারা চকমকি ঠুকে আগুন জ্বালাল তখন। ঘুম থেকে উঠতেই মা আমাকে খেতে দিয়েছিলো ঝলসানো নরম হরিণের মাংস। আঃ, কি তৃপ্তি!
মাথার ওপর আজ যেন নক্ষত্রখচিত ছায়াপথ। গভীর চুলে ঝরে পরছে দানা দানা সোনালি নক্ষত্রের কারুকাজ। পুণ্যপ্রবাহিণী অনন্তে বয়ে চলেছে ছোট্ট ডিঙিটি। ক্লান্তি নেই। সুস্বাদু হরিণের মাংসে ঋদ্ধ এ শরীর!
শরীরে অসীম শক্তি এখন। গুহার দেয়ালে ঠাকুরদার আঁকা বাইসনটা যখন তেড়ে এসেছিলো আমার দিকে, তীক্ষ্ণ পাথরে ক্ষতবিক্ষত করেছি অতিকায় প্রাণীটিকে। আজ আমিও লিখি, কঠিন পাথরে কুদে কুদে… নিদারুন দিনযাপনের কবিতা!
মাথার ওপর চাঁদোয়া থেকে নেমে আসে ঝকঝকে ঝাড়বাতিরা। মিটি মিটি হাসে। আমায় কামনা করেছিলো যে ভীল মেয়েটি, তার ভরা বুকে পাথর জমা হয়ে গেছে একদিন, আমার ছিপনৌকার প্রতিক্ষায়। জানিনা কবে নোঙর ফেলবো, কবে শেষ হবে সুদীর্ঘ এই প্রস্তর যুগ! এই আদিম নদীপথে অনন্ত যাত্রা আমার!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন