৬ আগস্ট, ১৯৪৫। জাপানের হিরোসিমা শহর। জনবসতি প্রায় সাড়ে চার লক্ষ। বি-২৯ বিমানে করে পরমাণু বোমা ‘লিটল বয়’ নিয়ে যাওয়া হল। একটা ভয়ংকর বিস্ফোরণ হল। কালো ধোঁয়া আর লাল আগুনে ছেয়ে গেল চারদিক। বোমার নাম ‘লিটল বয়’ অর্থাৎ ছোট্ট শিশু। বিকৃত রুচির চরম নিদর্শন। শিশুদের নামে পৃথিবীর প্রথম পারমানবিক মারণাস্ত্র তৈরি করেছিল আমেরিকা। বোমার ভেতর জ্বালানি হিসেবে ছিল ইউরেনিয়াম-২৩৫। দু লক্ষ মানুষ চিরকালের মতো পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন তৎক্ষণাৎ। যারা বেঁচেছিলেন, তারা তেজস্ক্রিয়তার শিকারে যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে অসহ্য দিনযাপন করেছেন।
পৃথিবী জুড়ে উত্তাল প্রতিবাদ শুরু হল। এরই মাঝে দুদিন পর, ৯ আগস্ট পরমাণু বোমা পড়ল নাগাসাকি শহরে। পৌনে তিন লক্ষ মানুষের বাস। প্রায় সত্তর হাজার মানুষের সাথে সাথে জীবন গিয়েছে। বোমার নাম ‘ফ্যাট ম্যান’ অর্থাৎ মোটা মানুষ। ‘ছোট্ট শিশু’ এবং ‘মোটা মানুষ’দের নিয়ে আমেরিকার বিকৃত রসিকতা। এই বোমার ভেতর জ্বালানি হিসেবে ছিল প্লুটোনিয়াম-২৩৯। ঝড় আগুন আর তেজস্ক্রিয় ভস্মের কালো মেঘ হিরোসিমা ও নাগাসাকির আকাশ ছেয়েছিল সে সময়। এই দানবীয় কান্ডের ফলস্বরূপ এখনও হিরোসিমা আর নাগাসাকিতে বিকলাঙ্গ শিশু জন্মাচ্ছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই তেজস্ক্রিয়তার বীভৎসতা চলতে থাকবে।
পরমাণু বোমার বিরুদ্ধে পৃথিবীতে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন যাঁরা, তাঁদের অন্যতম অগ্রণী ব্যক্তিত্ব বিজ্ঞানী লাইনাস পাউলিং। আমেরিকায় থেকেছেন। প্রশাসনের ভুল সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বার বার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁর খ্যাতনামা বই ‘নো মোর ওয়ার’। তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। রসায়নে নোবেল পেয়েছেন। বিশ শতকের বিস্ময় ছিলেন পাউলিং।
নীল আকাশে এক ঝাঁক পায়রা গন্তব্য খুঁজতে থাকে। শিশিরসিক্ত ধান-শিষ ছোঁয় আল্পনার মায়াবী রং। সকলকে ইংরেজি শুভ নববর্ষের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাই। ভালো থাকুন সকলে।
রোশনি ইসলাম
সোনালি বেগম
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন