সোমবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২২

সম্পাদকের নিবেদন

 

সম্পাদকের নিবেদন

 

ভারতীয় সভ্যতার একজন উল্লেখযোগ্য নাম ঋষি কণাদ। কণাদের সময়কাল নিয়ে মতভেদ আছে। কারো কারো মতে খ্রিস্টপূর্ব সাত থেকে ছয় শতকের মানুষ ছিলেন কণাদ। আবার কেউ কেউ বলেছেন যে তাঁর জীবনকাল খ্রিস্টপূর্ব ছয় থেকে পাঁচ শতক। নানা নামে কণাদ পরিচিত ছিলেন। কয়েকটি নাম যেমন কণাদ, কণভুক, কণচর, কণভক্ষ, কণব্রত ইত্যাদি। প্রতিটি নামেইকণশব্দটি যুক্ত আছে।কণ’-এর অর্থ হল খাদ্যশস্যের ছোট্ট কণিকা।কণ’-এর ক্ষুদ্রতার সাথেই জড়িয়ে আছে পরমাণুর চিন্তা। কণাদ বললেন পৃথ্বী, অপ, তেজস, বায়ু ––– এদের (যাদের বস্তুধর্ম আছে) ভাঙতে থাকলে যেখানে এসে পৌঁছবো আমরা, তার নাম পরমাণু। পরমাণুকে আর ভাঙা যায় না। এতো ছোট সে, যে তাকে মাপাও যায় না। একই রকম পরমাণুরা সব একসাথে যুক্ত হবে। এই যোগ দেবার ফলে একটা আকার তৈরি হবে, যা চোখে দেখা যাবে।

আবার গ্রীক সভ্যতায় পরমাণু ধারণার প্রবক্তা হিসেবে ডেমোক্রিটাস-এর কথাই বলা হয়। ডেমোক্রিটাসের সময়কাল হল খ্রিস্টপূর্ব ৪০০ থেকে ৪৭০। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এই যে, কণাদ এবং ডেমোক্রিটাসের পরমাণু ধারণায় হুবহু মিল দেখা যায়। তাঁদের ধারণা হল, কোন দৃশ্যমান বস্তুকে ভাঙতে থাকলে যেখানে পৌঁছবো আমরা তার নাম পরমাণু।

যে সময়ে জন্মেছিলেন কণাদ, তার প্রায় সোয়াশো বছর পর ডেমোক্রিটাসের জন্ম। পৃথিবীর দুই শ্রেষ্ঠ সভ্যতা ভারত গ্রীস- একই জ্ঞানের সৃজন পৃথক সময়কালে হয়েছে, তা হতেই পারে।

 

১৭৬৬ সালে সালে ব্রিটেনে জন্মগ্রহণ করেন জন ডালটন। ১৮০৮ সালে তিনি বই লিখলেন নিউ সিস্টেম অফ কেমিক্যাল ফিলোজফি তিনি এই বইয়ে লিখলেন, সব জিনিসের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণার নাম পরমাণু। পরমাণু অবিভাজ্য।

পরমাণুর ধারণায় ডালটন যা বলেছেন, তা আধুনিক বিজ্ঞানের আলোয় পরীক্ষিত। কিন্তু প্রায় আড়াই হাজার বছর আগের কণাদ বা ডেমোক্রিটাসের ভাবনার সাথে বিরোধ কিছু ছিল না। এরপর ক্রমশ অজস্র তথ্যের সংযোজন এবং সংশোধন হয়েছে পরমাণু-চর্চায়।

স্মরণীয় ঋষি কণাদ তাঁর পরমাণু-ভাবনা।

 

সকলে ভালো থাকুন। আন্তরিক শুভেচ্ছায় –––


রোশনি ইসলাম

সোনালি বেগম

৪টি মন্তব্য:

  1. সৌমিত্র চক্রবর্তী৭ ডিসেম্বর, ২০২২ এ ৭:৫৪ PM

    ভাবা যায় না! রঙিন ক্যানভাসের প্রত্যেক সংখ্যার সম্পাদকীয় চমকে দেয়। বহুধা ভাবনার এত বিস্তার সত্যিই বিস্ময়কর। আমরা পাঠকেরা অনেক নতুন বিষয় সম্পর্কে জানি, শিখি। অশেষ ধন্যবাদ সম্পাদকমণ্ডলীকে।

    উত্তরমুছুন
  2. খুব উজ্জ্বল সম্পাদকীয়।

    উত্তরমুছুন
  3. সুন্দর প্রতিবেদন। ঐতিহ্যময় ভারত। আমরা ভুলতে বসেছি।🙏

    উত্তরমুছুন
  4. মুগ্ধ হলাম আবার। অভিনন্দন। ভালবাসা।

    উত্তরমুছুন