সম্পাদকের নিবেদন
বিংশ শতাব্দীতে গুরুসদয় দত্ত (১৮৮২-১৯৪১) ছিলেন একজন বর্ণময় ব্যক্তিত্ব। তাঁর জীবনকালে তিনি ব্যাপ্ত কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত থেকে চরম সফলতা অর্জন করেছিলেন। তাঁর সকল কর্মের প্রেরণা ছিল সুস্থ জাতীয়তাবোধ, স্বদেশপ্রেম। যাঁর ভাবনার মূলে রয়েছে মানুষের হিতসাধনার ব্রত। বিশ শতকের বাংলায় স্বদেশি যুগের আবহাওয়ায়, জাতিয়তাবোধের সঙ্গে বিশ্ব-ঐক্য-অনুভূতির মিলন, গুরুসদয়ের জীবন-দর্শনেরই পরিচয়। আন্তর্জাতিকতাবোধের এই রূপটি আমরা রবীন্দ্র-দর্শনে অতিঅবশ্যই পেয়েছি। গুরুসদয় দত্তের ব্রতচারী আন্দোলনের মধ্যে, যে লোকহিত-সাধনের সম্মিলিত ইতিবাচক প্রক্রিয়াটি রয়েছে, তা বুঝতে পেরেছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। স্বদেশপ্রেম গুরুসদয়ের কাছে মাটির কাছাকাছি মানুষের কল্যাণ-সাধনের ব্রতকেই বোঝাতো। রবীন্দ্র-ভাবনার সঙ্গে তাঁর ভাবনার অনেক মিল দেখা যায়। রবীন্দ্রনাথের গ্রামভাবনা ও স্বদেশভাবনা গুরুসদয়কে প্রাণিত করেছিল বলেই মনে হয়।
গুরুসদয় দত্ত বাংলার লোকশিল্প এবং বাংলার লোকনৃত্য, এই দুই বিষয়ে আজীবন চর্চা করেছেন। তাঁর জীবিতকালে লোকসংস্কৃতি-বিষয়ক উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ প্রকাশিত হয় দুটি, –––
১৯৩৩ সালে Indian Folk Dance and Folk Song Movement এবং ১৯৩৯ সালে পটুয়া সংগীত।
এছাড়া ১৯২৯ সাল থেকে ১৯৪১ সাল তেরো বছরে লোকসংস্কৃতি, পল্লিসংগঠন ও ব্রতচারী বিষয়ে লেখেন অনেকগুলি গ্রন্থ।
১৯২৯-এ তিনি ময়মনসিংহের কালেক্টর ও ম্যাজিস্ট্রেট থাকাকালীন গ্রামোন্নয়ন আন্দোলন শুরু করেন। বীরভূমে আসার পর, ১৯৩১ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি শিক্ষা শিবির থেকে যার সূত্রপাত, ১৯৩২-এ প্রতিষ্ঠিত সেই ব্রতচারী আন্দোলন, গুরুসদয়ের সর্বাধিক পরিচিত ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
ব্রতচারী স্ত্রীপুরুষ-জাতি-ধর্ম-বয়স নির্বিশেষ সংগঠন, যার উদ্দেশ্য আত্মিক ও সামাজিক উন্নতি। জাতিয়তাবাদের পাশাপাশি বিশ্বনাগরিকত্বের অঙ্গীকার। শরীর ও মন গঠন, দেশীয় ঐতিহ্য ও লোকসংস্কৃতি সংরক্ষণ ও চর্চায় উৎসাহ দান, বিশেষত লোকসংগীত ও লোকনৃত্য।
গুরুসদয়-ভাবনাকে উজ্জীবিত করতে তাঁর গ্রন্থগুলির নিবিড় পাঠ জরুরি, এবং তাঁর জীবনদর্শনের প্রকৃত স্বরূপ উপলব্ধি করা।
সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছায় –––
রোশনি ইসলাম
সোনালি বেগম
ঠিক তাই...
উত্তরমুছুনসুন্দর লেখা
প্রেমাংশু শ্রাবণ
উত্তরমুছুনজানতে পারলে জ্ঞানের পরিধি বাড়ে
ধন্যবাদ সম্পাদক'কে
সুন্দর আলোকপাত।
উত্তরমুছুনএভাবে মহৎ প্রাণের প্রতি আলোকপাত রঙিন ক্যানভাস পত্রিকাকে অন্য এক উচ্চতর মাত্রায় প্রতিষ্ঠিত করল। আজকের প্রজন্মের প্রত্যেকের পড়া উচিৎ। আশা করব আগামীতেও আমরা আরও জানতে পারব। ধন্যবাদ সম্পাদক।
উত্তরমুছুনভাল লাগল। শুভেচ্ছা...
উত্তরমুছুন